অধ্যক্ষের বাণী
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’য়ালার, যিনি দয়াময়,যিনি মানুষকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন।
দরুদ ও সালাম সেই রাসুলের (সঃ) প্রতি যিনি কুরানের আলোয় আলোকিত করেছিলেন আরবের বর্বর জাতিকে।
প্রিয় অভিবাবক/অভিভাবিকা আসসালামু আলাইকুমওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আপনার সন্তানের জন্য কেবল বাড়ি ,গাড়ি ও জমিতে বিনিয়োগ নয় বরং তার সুশিক্ষায় অধিক বিনিয়োগ করুন। মুসলমানদের জন্য কুরআন কেন্দ্রিক শিক্ষাই হচ্ছে সুশিক্ষা । আপনার সন্তানের জন্য কুরআন কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার দ্বার উন্মুক্ত করেছে “ স্কুল অব দা হলি কুরআন ” ।
প্রিয় মুসলিম ভাই / বোন ,
আপনি যদি ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করেন তবে অবশ্যই জানতে পারবেন যে,১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশির প্রান্তরে বাংলার মুসলমানদের বিপর্যয় পর পুরো ভারতে উপনিবেশিক শক্তি তথা(খৃস্টবাদ ) তাদের ক্ষমতাকে সুসংহত করে জাতীয় ,ধর্মীয় ও সমাজ জিবনে ব্যাপক রপান্তর ও বিবর্তন সূচিত করেছে । ইংরেজ শক্তির উত্থানের সাথে সাথে এ অঞ্চলের মুসলমানদের ভাগ্য বিপর্যয়ের সূচনা হয়।
শুধুমাত্র শাসন ক্ষমতা হারানোর মধ্যেই তাদের ভাগ্যবিপর্যয় সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং জাতীয় জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের সুপরিকল্পিত ভাবে তাদেরকে এক ভাগ্যাহত লাঞ্ছিত মানবগোষ্ঠীতে পরিনত করা হয়। দাপ্তরিক ভাষা ফার্সিকে উচ্ছেদ করে বাধ্যতামূলক ইংরেজিকে চাপিয়ে দেওয়া হয়। ফলে চাকুরিচ্যুত হয়ে কাঙালের পর্যায়ে নেমে পরে সম্ভ্রান্ত মুসলিম জনগোষ্ঠী । নিজেদের বলয়ের এবং পোষ্য ঐতিহাসিকদের দ্বারা মুসলমানদের ইতিহাস বিকৃত করে একাধারে মুসলিম তাহজিব তমুদ্দিনের মূলোৎপাটন ঘটায়।
সবচেয়ে বড় আঘাত হানে ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থার উপর, ইসলামি শিক্ষাকে মূলোৎপাটন করে সেকুল্যার শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুসলমানদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয় । ভেঙ্গে দেয়া মেরুদন্ড জোড়া
লাগাতে এবং যুগ চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে ছাত্রদের যোগ্য,দক্ষ, দূরদর্শী ও মডেল হিসেবে তৈরি করতে হবে । এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্কুল শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রদের কুরআনও হাদিসে দক্ষ করে গড়ে তলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে “ স্কুল অভ দা হলি কুরআন ”
কেন আপনার সন্তানকে স্কুল অভ দা হলি কুরআন এ পড়াবেন ?
যমিনের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালনার্থে : আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের এই যমিনের খলিফা অর্থাৎ প্রতিনিধি হিসাবে প্রেরন করেছেন। প্রতিনিধির দায়িত্বপালনার্থে আমাদের সন্তানদের স্কুল শিক্ষার পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে ।
রিসালাতের দায়িত্বপালনার্থে : মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তা’য়ালা যুগে যুগে নবী রসূল প্রেরন করেছেন , মুহাম্মাদ (সঃ) এর মৃত্যুর পর আর কোন নবী রসূল আসবেননা কিয়ামত পর্যন্ত সকল উম্মাতের উপর রিসালাতের(দ্বীনপ্রচার) এই গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে । কুরআনি শিক্ষা লাভ করা ছাড়া এই দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করা সম্ভব নয়।
সন্তানের প্রতি পিতার হক আদায় : সন্তানের প্রতি আল্লাহ তা’য়ালা যে সকল হক বর্ণনা করেছেন ,তার একটি হচ্ছে তাকে কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত করা ।
ফরজ দায়িত্ব পালনার্থে : সলাত, সাওম, হজ্ব, যাকাত আদায়ের পূর্বেই ইলমে দ্বীন অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরজ । এই ফরজ দায়িত্ব পালনার্থেই আপনার সন্তানকে কুরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে ।
পরকালে পুরস্কৃত হতে : কোন ব্যাক্তি যদি তার সন্তান কে হাফেজ ও আলেম বানায় এবং ঐ সন্তান যদি তদানুযায়ী আমল করে তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা কিয়ামত দিবসে পুরস্কার স্বরূপ পিতামাতাকে নূরের মুকুট পরিধান করাবেন ,যার আলো হবে সূর্যের আলোর চেয়ে অধিক উজ্জ্বল। হাফেজ আলেম সন্তানের কারনে সেদিন সকলের সামনে পিতামাতাকে সম্মানিত করা হবে ।
পরকালের জবাবদিহিতা হতে নিষ্কৃতি পেতে : ছহিহ হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে “তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল আর তোমাদেরকে তোমাদের অধিনস্থদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে”। কিয়ামত দিবসের এই জবাবদিহিতা থেকে বাঁচতে সন্তানকে কুরআন শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে ।
পরকালে আপনার সন্তান আপনার বিরুদ্ধে মামলা করা থেকে পরিত্রান পেতে : সন্তানদের কে যদি কুরআন শিক্ষায় শিক্ষিত না করা হয় তাহলে তাদের পথভ্রষ্ঠতার পথ উন্মুক্ত হয়ে যায়। পিতামাতার করনে যদি সন্তান পথভ্রষ্ঠ হয়ে যায়, তবে তারা কিয়ামত দিবসে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলবে ,“হে আমাদের রব ! যারা আমাদের পথভ্রষ্ঠ করেছে তাদের দেখিয়ে দিন,আজ তাদের আমরা পদদলিত করবো যাতে তারা জাহান্নামের তলদেশে প্রবেশ করে।”